empty
 
 
06.10.2025 11:01 AM
আসন্ন দিনগুলোতে ইউরোর দরপতন বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারের বক্তব্য অনুযায়ী বর্তমানে ইসিবি অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের অবস্থান গ্রহণ করছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়তা করছে না। লাগার্ডে উল্লেখ করেন, তিনি বর্তমান আর্থিক নীতিমালার কাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট, কারণ সার্বিকভাবে ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতির হার স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমরা বেশ ভালো অবস্থানে আছি, এবং আমরা চাই সেটা এভাবেই থাক।"

This image is no longer relevant

তার মতে, এই ফলাফল এসেছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত গঠনতান্ত্রিক সংস্কারের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে। মূলত, মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এমন একটি মুদ্রানীতিগত অবস্থানে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে সহায়তা করে, যেখানে সুদের হার পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে না এবং বিনিয়োগ ও ভোক্তা চাহিদার প্রবৃদ্ধি বজায় থাকে।

তবে লাগার্ডে জোর দিয়ে বলেন– "স্থিতিশীলতা মানে কিন্তু ঝুঁকির অনুপস্থিতি নয়।" তিনি জ্বালানি বাজার থেকে উদ্ভূত সম্ভাব্য চাপ, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কথাও তুলে ধরেন—যা মূল্যস্ফীতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে উস্কে দিতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি মুদ্রাস্ফীতি সূচকের ওপর নিবিড় নজরদারি এবং নমনীয় ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার উপযোগী যোগাযোগ কৌশল বজায় রাখার পক্ষে মত দেন।

যদিও ২০২৫ সালের মধ্যে সুদের হার কেবল আটবার কমানো হয়েছে, অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন বছরের বাকি সময়ে আর কোনো পরিবর্তন আসবে না। মুদ্রাস্ফীতি এখন ইসিবি-র ২%-এর লক্ষ্যমাত্রায় স্থিতিশীল রয়েছে, যদিও গত মাসে তা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। লাগার্ডে বলেন, "আমরা উল্লেখযোগ্য হারে মুদ্রাস্ফীতির ওঠানামা প্রত্যাশা করছি না। আমাদের ম্যান্ডেট পূরণের জন্য যা করা প্রয়োজন, আমাদের সেটাই করতে হবে।"

অর্থনীতি বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে লাগার্ডে বলেন, "ইউরোজোনের কিছু সদস্য রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের পুনরুদ্ধারের গতি বেশ মন্থর। তবে সামগ্রিকভাবে আমি বলব, ইউরোজোনের অর্থনীতি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীলতা দেখিয়েছে।"

এই মূল্যায়নকে সমর্থন করে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উন্নয়নের গতি সমান না হলেও ইউরোজোনের সম্মিলিত জিডিপি বেশ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে যেসব দেশ বাজেট ব্যবস্থাপনায় বেশি নমনীয়তা দেখিয়েছে, তারা নতুন বাজার পরিস্থিতির সাথে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়েছে; তবে যেসব দেশ জ্বালানি সংকট ও কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতার মধ্যে রয়েছে, তারা এখনও সংগ্রাম করছে।

লাগার্ডে জোর দিয়ে বলেন, "স্থিতিশীলতার ভিত্তি হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সদস্য রাষ্ট্র সরকারগুলোর মধ্যে নীতিমালা সামঞ্জস্যতা।" তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সমন্বিত ঋণ সহায়তা এবং বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সংস্কার কর্মসূচি কেবল কর্মসংস্থান খাতের সুরক্ষা নয়, বরং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করছে। লাগার্ডে বলেন, "আমাদের হাতে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার আছে, ক্ষমতা আছে এবং ইচ্ছাও আছে।"

তিনি একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট হওয়ার গুঞ্জন নাকচ করে দিয়ে বলেন, "আমি মনে করি সেটা (ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হওয়া) ভীষণ কঠিন একটি কাজ, এবং সেই কাজে আপনাকে 'প্রোগ্রামড' হতে হয়; আমি মনে করি বিষয়টা আমার ক্ষেত্র নয়।"

প্রসঙ্গত মনে রাখা ভালো, ক্রিস্টিন লাগার্ডের অ-পুনঃনির্বাচনযোগ্য আট বছরের মেয়াদকাল ২০২৭ সালের অক্টোবর মাসে শেষ হচ্ছে, এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মেয়াদকাল শেষ হবে তার কয়েক মাস আগেই। লাগার্ডে বলেন, "এর মানে এই নয় যে আমি আমার দেশ বা ইউরোপকে সেবা দিতে চাই না—আমি স্বার্থপর হবো, এমনটাও না, তবে আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট হওয়া একটি নিরন্তর ক্লান্তিকর কাজ, এবং প্রেসিডেন্ট হতে গেলে একটু দৃঢ়চিত্তের হতে হয়।"

EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র
বর্তমানে ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1745 লেভেলে পুনরুদ্ধারের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এটি সম্ভব হলে পরবর্তীতে মূল্য 1.1790-এ পৌঁছাতে পারে। সেখান থেকে পেয়ারটির মূল্য 1.1820 পর্যন্ত উঠতে পারে, তবে বড় ক্রেতাদের সহায়তা ছাড়া এটা করা কঠিন হবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে 1.1845। অন্যদিকে, যদি এই পেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, তাহলে আমি মূল্য 1.1710-এর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সক্রিয় হওয়ার প্রত্যাশা করছি। সেখানে চাহিদা না দেখা গেলে পুনরায় 1.1680 লেভেলে নেমে যাওয়ার অথবা 1.1650 লেভেল থেকে লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে।

GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র
পাউন্ডের ক্রেতাদের জন্য প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3450 রেজিস্ট্যান্স লেভেল অতিক্রম করানো। এটি সম্ভব হলে মূল্য 1.3500-এর দিকে যেতে পারে, যার ওপরে আর উল্লেখযগ্য কোনো মুভমেন্ট সহজ হবে না। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3555। অন্যদিকে, দরপতন হলে বিক্রেতারা মূল্যকে 1.3400 লেভেলে পুনরুদ্ধার করতে চাইবে। তারা যদি সফল হয়, তবে ওই রেঞ্জ ব্রেক করে GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3365-এ পৌঁছাতে পারে এবং দরপতন আরও প্রসারিত হয়ে এই পেয়ারের মূল্য 1.3325 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.